কুলেখাড়ার গুণ ও তার রোগ নিরাময় ক্ষমতা।
কুলেখাড়া বাংলার সর্বত্র পাওয়া
যায়। গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত এই শাকটির পাতা স্রু ও লম্বা এবং সারা গাঁয়ে রয়েছে কাটা। মূলত বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্্
আসাম, উড়িষ্য্, বিহার্, উত্তরপ্রদেশ ও ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এই শাক
পাওয়া যায়। তবে এর প্রাচীন নাম ক্ষুরক। এই নামটি অধিকাংশ লোকের কাছেই অজানা। বৈদিক তথ্য থেকে জানা
যায় এ্রর ঔষধি গুন আছে প্রচুর। চরক সংহিতা ক্ষুরক
নামটি পাওয়া যায়। চরক সংহিতায় বলা হয়েছে কুলেখাড়ার
পুরুষের শুক্র
শোধনের উপযোগিতা রয়েছে। কোন কোন শাস্ত্রে একে ইক্ষুরক বলা হয়েছে। সংহিতার যুগে এসে এর নাম হয় কোকিলাখ।
কারণ বীজ কোকিল পাখির চোখের রং এর মোত।
শাকটির হিন্দি নাম তালমাখনা। এবং বটানিকাল নাম Asteracantha
Longifolia Nees. শাকটির নানাবিধ রোগ
প্রতিরোধের ক্ষমতা আছে। এবার আমরা এর রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা নিয়ে আলোচনা করব।তার আগে বলে
পাখি পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র বাজারে এই শাক পাওয়া যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
১) শোথঃ
- পায়ের চেটো যদি ভুলে যায় বা গায়ের বিভিন্ন অংশ ফুলে ওঠে সেক্ষেত্রে
কেবলমাত্র কুলেখাড়া পাতার রস 1 চামচ একটু গরম করে সকালে ও বৈকালে দুবার
খেতে হবে। এর সঙ্গে মধু ২ বা ৩ চামচ খাওয়া যেতে পারে। তাহলে সেটা কমে যাবে।
২) পাণ্ডূ
রোগঃ - এই রোগের লক্ষণ হলো শরীরের রঙ
ফ্যাকাশে হয়ে যায় । প্রচলিত ভাষায় একে বলা হয় এনিমিয়া। এক্ষেত্রে কুলেখাড়া পাতার রস ৪
চামচ একটু গরম করে দুবেলা খেতে হবে তাহলে এই রোগের হাত থেকে
রক্ষা পাওয়া যাবে।
৩) হিমোগ্লোবিনের অভাবঃ রক্তে হিমোগ্লোবিনের অভাব
দেখা দিলে কুলেখাড়া পাতার রস সিদ্ধ করে ছেঁকে নিয়ে সেই জল খেলে এক সপ্তাহের
মধ্যে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
৪) অনিদ্রায়ঃ
যাদের
ঘুম হয় না তাদের
ক্ষেত্রে কুলেখাড়ার শিকড়ের রস দুই থেকে চার চামচ সন্ধ্যার পর খেলে সুনিদ্রা হয়। হারীত সংহিতায় এই উপদেশ পাওয়া যায়।
৫) দীর্ঘ সম্ভোগ: যারা
দীর্ঘ সম্ভোগে ইচ্ছুক তাদের আলকুশি বীজ শোধন করে গুঁড়ো করে কুলেখাড়া বীজের গুড়োর সঙ্গে গরম দুধ মিশিয়ে খেতে হবে। কয়েক দিন পর উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে।
৬)রক্ত পড়া রোধেঃ
পড়ে গিয়ে বা কোন কিছুতে লেগে গেলে বা শরীর থেকে রক্ত পড়তে থাকলে এই গাছের
পাতা থেঁতো করে ওই কাটা জায়গায় চেপে দিয়ে বেঁধে দিয়ে দিন। রক্ত বন্ধ হয়ে যাবে এবং ক্ষত শুকিয়ে যাবে.
৭) পোড়া নারাঙ্গা বা
হারপিস – এই গাছের পাতা ও কাচা হলুদ একসঙ্গে বেটে লাগাতে হবে। এর ফলে জ্বালা-যন্ত্রণা যেমন চলে যাবে
তেমনি ক্ষত শুকিয়ে যাবে।
8) যৌবন
শক্তি বৃদ্ধিতে – যাদের যৌবন শক্তি কমে গেছে। তাদের ক্ষেত্রে এই গাছের মূল চূর্ণ দু'গ্রাম দুধ এ মিশিয়ে খেলে এই অসুবিধা দূর হয়। চরক সঙ্গীতার চিকিৎসা সংস্থানে
26 অধ্যায়ে এই উপদেশ
পাওয়া যায়।
৯) উগ্র রাগ প্রশমনে - যারা হঠাৎ হঠাৎ রেগে যান
মূলত শিশুদের ক্ষেত্রে এটা বেশি দেখা যায়। তাদের ক্ষেত্রে পাতা ও ডাটা দিয়ে ঝোল করে বেশ কিছুদিন খাওয়াতে হবে । তাহলে উপকার
পাওয়া যাবে।
তথ্য অতনু সরকার।
তথ্য অতনু সরকার।
No comments:
Post a Comment